রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা, পালস অক্সিমিটার এবং কোভিড-১৯  

কোভিড-১৯ কি একজন ব্যক্তির রক্তে অক্সিজেনের স্তর হ্রাস করে?

শারীরিক ভাবে অসুস্থতা অনুভব না করলেও কোভিড-১৯ আক্রান্ত অনেকের রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা বা অক্সিজেন লেভেল কমে যেতে পারে। দেহে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়া এমন একটি প্রাথমিক লক্ষণ, যা থেকে বোঝা যেতে পারে যে ওই ব্যক্তির চিকিত্সা সেবার প্রয়োজন।

পালস অক্সিমিটার কি?

পালস অক্সিমিটার এমন একটি যন্ত্র যা দ্বারা ব্যক্তির রক্তে বিদ্যমান অক্সিজেনের মাত্রা বা স্তর পরিমাপ করা যায়। এটি একটি ছোট ডিভাইস যা আঙুল বা শরীরের অন্য কোনও অংশে আটকে দেয়ার মাধ্যমে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা পরিমাপ করা হয়। প্রায়শই হাসপাতাল এবং বিভিন্ন ক্লিনিকে এটি ব্যবহৃত হয় এবং চাইলে বাড়িতে ব্যবহারের জন্য পালস অক্সিমিটার কেনা যায়।

অনেকের ক্ষেত্রে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ব্যক্তির রক্তচাপ বা শরীরের তাপমাত্রার মতই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, কারণ এটি তাদের দেহ সঠিক ভাবে কর্মক্ষম রয়েছে কিনা তা বুঝতে এটি সহায়তা করে। বিশেষত যাদের ফুসফুস বা হার্টের অসুস্থতা রয়েছে তারা ডাক্তারের পরামর্শক্রমে বাড়িতে পালস অক্সিমিটার ব্যবহার করতে পারেন, এটি আপনাকে শরীরের অবস্থা বুঝতে সহায়তা করবে। অনেক সময় ফার্মাসি এবং ড্রাগ স্টোরগুলিতে প্রেসক্রিপশন ছাড়াই পালস অক্সিমিটার কিনতে পাওয়া যায়।

কেউ কোভিড-১৯ আক্রান্ত কিনা বা আক্রান্ত অবস্থায় তার শরীরের অবস্থা কেমন রয়েছে তা কি পালস অক্সিমিটার দ্বারা বোঝা সম্ভব?

কেউ কোভিড-১৯ পজিটিভ কিনা তা জানার জন্য বিশেষজ্ঞরা পালস অক্সিমিটার ব্যবহারের পরামর্শ দেন না। আপনার কোভিড-১৯ এর লক্ষণ দেখা দিলে বা আপনি আক্রান্ত কারও সংস্পর্শে এসে থাকলে যথাযথ ভাবে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করুন।

কেউ যদি কোভিড-১৯ পজিটিভ হয়ে থাকেন তাহলে পালস অক্সিমিটার ব্যবহার করে তার স্বাস্থ্যের উপর নজর রাখা যেতে পারে এবং তার চিকিত্সা সেবা গ্রহণ প্রয়োজন কিনা সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যেতে পারে। পালস অক্সিমিটার স্বাস্থ্যের উপর নজরদারিতে সহায়তা করলেও এর মাধ্যমে সবকিছু বোঝা সম্ভব নয়। স্বাস্থ্যের সামগ্রিক অবস্থা বোঝার জন্য এছাড়াও আরও অনেক পদ্ধতি রয়েছে। অনেক সময় কারও কারও দেহে পর্যাপ্ত অক্সিজেন থাকার পরেও প্রচণ্ড অসুস্থতা অনুভব করতে পারেন, আবার রক্তে অক্সিজেন স্বল্পতা থাকার পরেও অনেকে অসুস্থতা বোধ করেন না।

এছাড়াও গাঢ় রঙের ত্বক রয়েছে লোকের ক্ষেত্রে পালস অক্সিমিটারের ফলাফল সব সময় যথাযথ নাও হতে পারে। কারণ অনেক সময় যে রিপোর্ট আসে তার থেকে তাদের দেহে অক্সিজেনের মাত্রা বেশি থাকে। তাই যে বা যিনি যন্ত্রটি ব্যবহার করছেন তাকে এটি মাথায় রাখতে হবে।

যদি কেউ শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন, স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত শ্বাস গ্রহণ করেন, বা তাদের প্রতিদিনের কাজকর্ম করতে খুব অসুস্থ বোধ করেন, তবে তাদের দেহে অক্সিজেনের মাত্রা হ্রাস পেয়ে থাকতে পারে। এই অবস্থায় পালস অক্সিমিটারের রেজাল্ট যাইহোক না কেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে।

রক্তে অক্সিজেনের স্বাভাবিক মাত্রা কি?

অক্সিজেনের সাধারণ বা স্বাভাবিক স্তর সাধারণত ৯৫% বা তারও থেকেও বেশি হয়। দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুসের রোগ বা স্লিপ এপনিয়াতে আক্রান্ত কিছু লোকের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক স্তর ৯০% এর আশেপাশে হয়। পালস অক্সিমিটারে “SpO-2” রিডিংয়ের মাধ্যমে রক্তে অক্সিজেনের শতকরা হার জানা সম্ভব।

রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে কম হলে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে। তথ্যসূত্র: মিনেসোটা ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ

 

টাইমস/এনজে

Share this news on:

সর্বশেষ